Skip to main content

"পায়েরতলায় সর্ষের শুড়শুড়ি, যাচ্ছি তাই গরুমারা লাটাগুড়ি" - Janobarta Digital

"পায়েরতলায় সর্ষের শুড়শুড়ি, যাচ্ছি তাই গরুমারা লাটাগুড়ি"

           
শোভন নন্দী: ২০১৮র এপ্রিলের শেষের দিক  তখন গিন্নীর স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ,কদিন ধরে লক্ষ্য  করছি সহধর্মিনীর মুখমণ্ডলে আষাঢ়ে মেঘের ঘনঘটা,প্রমাদ গুনলাম,বেশ বুঝতে পারলাম  আগামী কদিন চায়ে চিনি কম তো  ভোজনে নুন।পরিস্থিতি  বেশি ঘোরালো হওয়ার পূর্বেই   তৎকাল টিকিটএর জন্য বন্ধু এজেন্টের শরণাপন্ন হলাম।  তার আশ্বাসে লাগেজ গুছিয়ে মোবাইলে টিকিট কনফার্ম এর মেসেজের অপেক্ষায় থাকা।  ট্রেনে চাপলেইতো হবেনা,দিন-  চারেকের মাথাগোঁজার ঠাঁই? তাও ইলেভেনথ-আওয়ারএ, হেঁপা অনেক,কিন্তু বুঝবে কে। কনফার্ম মেসেজ আসামাত্র  লাটাগুড়িতে দরকারি কিছু ফোনা-ফুনি সেরে নিলাম।
 অতঃপর,নির্দিষ্ট দিন ও সময় ব্যান্ডেল থেকে কামরূপ এক্সে চেপে পরদিন সকাল আটটায় নিউ ময়নাগুড়ি নেমে টো টো ধরে মিনিট দশেক ময়নাগুড়ি  সিনেমা মোড়।সেখান থেকে লাটাগুড়ির বাস ধরে আধা- ঘন্টায় নেওড়া মোড় অর্থাৎ  গরুমারা জঙ্গলের উপকণ্ঠে। পূর্বে ফোনা ফুনি সূত্রে  লাটা- গুড়ির জঙ্গল সাফারি টিকিট কাউন্টারের ঢিল ছোড়া দূরত্বে  সঞ্জয় স্যার এর ছবির মতো সুন্দর সাজানো গোছানো সিলভান রিট্রিট এ  জায়গা  মিলেগেল।রৌদ্রোজ্জ্বল আকাশের মতো সহধর্মিনীর মুখও ঝলমল।ভ্রমণ শব্দটির  মধ্যে একটা ম্যাজিক লুকিয়ে আছে,শব্দটি কর্ণকুহরে প্রবেশ মাত্র শরীর-মন সতেজতা লাভ করে।যাইহোক,সিলভান  এর সদা হাস্যময় ম্যানেজার বন্ধু তাপস ঘোষের সৌজন্যে  দশ-টার মধ্যে ব্রেক-ফাস্টও  সারা হলো।ঘন্টাখানেক রেস্ট নিয়ে, ফ্রেশ হয়ে ম্যানেজার তাপসের advice মতো গরুমারা জঙ্গল সাফারির  টিকিট কাউন্টার এ  হাজির হওয়া গেল,বৈকালীন সাফারির টিকিট দেওয়া হয়  দুপুর দুটো থেকে,মরশুমে টিকিটের চাহিদা বেশী হওয়ার কারণে অনেক আগে থেকে  লাইনে  দাঁড়ানো প্রয়োজন।
 এ ব্যাপারে যাবতীয় খোঁজ খবর নেটের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।যাইহোক,শেষ ট্রিপের টিকিট কাটা হলো,কারণ এই ট্রিপে জঙ্গল সাফারির সাথে আদিবাসী নৃত্য উপরিপাওনা।  টিকিট কাটার সময় সচিত্র পরিচয় পত্র ও প্রত্যায়িত কপি  সঙ্গে রাখা একান্ত আবশ্যক।  টিকিট কেটে রিট্রিট এ ফিরে   মধ্যাহ্ন ভোজ সেরে স্বল্পবিশ্রাম অতঃপর বিকেল8টেয় আবার গরুমারা টিকিট কাউন্টার এর  সামনে টিকিট দেখিয়ে জীপএ চেপে জঙ্গলসাফারি উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া।একেএকে যাত্রা প্রসাদ ওয়াচ টাওয়ার,রাইনো ভিউপয়েন্ট থেকে বন্যপ্রাণ দেখা সাঙ্গ করে সন্ধ্যার সময় এক গোলাকার জায়গায়  সবাইমিলে  সমবেত হওয়া, উদ্দেশ্য চা-বিস্কুট সহযোগে আদিবাসী নৃত্য দর্শন,এবার হোটেলে ফিরে আরামদায়ক বিছানায় শরীর এলিয়ে দেয়া। সিলভানের মুখরোচক রাতের খাবার সাঙ্গকরে তাড়াতাড়ি শয়ন,পরদিন ব্রেকফাস্ট সেরে সকাল সকাল ম্যানেজারের ঠিক করা গাড়িচড়ে চালসা, মূর্তি,ঝালং,প্যারেন,সামসিং, বিন্দু,সুনতালেখোলা,রকি-  আইল্যান্ড,সারাদিনের সফর।
 চা বাগান,ভেষজ প্লানটেশন, রডড্রেনডন, জলঢাকা,মূর্তি নদীর রূপ এককথায় অনন্য। কত রঙীন প্রজাপতি,পাখি, পাহাড়ী ফুটফুটে শিশুদের   দলবেঁধে স্কুল যাওয়া,যে দিকে দুচোখ যায় সবুজের আঁচল, আহা এমন কেন হয়না মোর হেথা...।রোদ ঝলমলে দিনে  রজতশুভ্র কাঞ্চনজঙ্ঘা দৃশ্য মান,দিনের ট্যুর শেষকরে এবার হোটেলে ফেরার পালা।    রাতের খাওয়া সেরে ক্লান্ত শরীর  বিছানায় এলিয়ে দেয়া, তৃতীয় দিন বন্ধু তাপসের কথা মতো  Alto চড়ে সকালসকাল  নতুন স্পট লালঝামেলা বস্তি।চালসা কে বাঁয়ে রেখে নাগর-কাটা চা বাগান অতিক্রম করে  ছোট্ট পাহাড়ী জনপদ লাল ঝামেলা বস্তি,কুলকুল করে  বয়ে যাচ্ছে ডায়না নদি।যার এই কূলে বাংলা আর ঐকূলে  ভুটান।অনেকটা বিন্দুর মতো, এখানে হাইডেল প্রজেক্টটা নেই এই যা তফাৎ,অপার শান্তি আছে,আছে  সবুজ চোখজুড়ানো পাহাড়শ্রেণী।
 দু তিনটি হোমেস্টে গড়ে উঠেছে, এর পরের গন্তব্য,ঝান্ডি দাঁড়া ও ফাগু।যে পথে এসেছিলাম সেই পথ ধরে এবার চালসা ও মালবাজার কে ডাইনে রেখে  গরুবাথান চা বাগানের বুক চেরা সরীসৃপসম পথ ধরে পাক খেতেখেতে চড়াই  বেয়ে ঝান্ডিদাড়া পৌঁছনো,এখানেও  নিসর্গ প্রকৃতি,দু একটা দিন প্রকৃতির সান্নিধ্যে কাটানোর  আদর্শ ঠিকানা,তার সুন্দর ব্যাবস্থাও আছে,আমাদের হাতে সময় কম,তাই আবার  আসবো এই ইচ্ছা পোষণকরে  পরবর্তী গন্তব্যে এগিয়ে চলা।এবার ফাগু,পথে সঙ্গী হলো চেল নদী।ব্রিজ পেরোতেই চোখে পড়লো chorten এর চূড়ো, গাড়ি আরো ওপরে  উঠতে পুরো chorten নজরে এলো,নবনির্মিত,সংলগ্ন  ইকো পার্কটি  বেশ সুন্দর,যেন হাত ছানি দেয়,দাঁড়াও পথিকবর    তিস্ট ক্ষণকাল।এবার হোটেল ফেরার তাড়া, মধ্যাহ্ন ভোজ  শেষে নিউময়নাগুড়ি দৌড়তে হবে,কারণ ছুটি শেষ,এবার ঘরে ফেরার পালা।প্রয়োজনীয় তথ্য,সিলভান রিট্রিট এ হাজার থেকে ডাবল বেডেড শুরু,কটেজ টাইপ রুম আছে,খাওয়াদাওয়া mouthwatering, যাবতীয় যোগাযোগ-9832439913



লেখক:শোভন নন্দী

ছবি:মণিদীপা নন্দী



আপনিও পাঠাতে পারেন আপনার ভ্রমন অভিজ্ঞতা, WhatsApp করুন এই নম্বরে: 70032 36180(লেখা এবং ছবিসহ), আপনার অভিজ্ঞতা আমরা পৌঁছে দেবো ৬৫ হাজার দর্শকের কাছে।
[ ন্যূনতম ৭টি ছবি এবং অধিকতম ১০টি ছবি ]

Comments

ঝলকে ৫

জলে ডুবে মৃত্যু ১৪ বছরের বালকের

  বন্দনা ভট্টাচার্য্য, হুগলী :- সকালে ফুটবল খেলতে গিয়ে জলে ডুবে মৃত‍্যু হল এক নাবালকের। ঘটনাটি ঘটেছে হুগলীর কোন্নগরে অ‍্যালকালি মাঠ সংলগ্ন পুকুরে। মৃত নাবালকের নাম অনিকেত সরকার। বয়স ১৪ বছর। বাড়ি কোন্নগর মাষ্টারপাড়ার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ধ্রুবতারা ক্লাবের সামনে। অনিকেত কোন্নগর নবগ্রাম বিদ‍্যাপীঠের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র। কোন্নগর স্টেশনের পাশে একটা পানের দোকান চালায় অনেকেতের বাবা অলোক সরকার। আর মা অনিমা সরকার রান্নার কাজ করে। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান অনিকেত। পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মত সোমবার সকালে অ‍্যালকালি কোয়ার্টারের মাঠে বন্ধুদের সাথে ফুটবল খেলতে যাবে বলে ভোরবেলা ৪.৩০ নাগাদ বাড়ি থেকে বের হয়। ৮ টা নাগাদ এক বন্ধুর মা এসে অনিকেতের বাড়িতে খবর দেয় অনিকেত জলে ডুবে গেছে। তৎক্ষনাৎ বাবা, মা সহ প্রতিবেশীরা এবং স্থানীয় ধ্রুবতারা ক্লাবের সদস‍্যরা ঘটনাস্থলে পৌছায়। উপস্থিত হয় ১৭নং ওয়ার্ডের পৌরপ্রতিনিধি অভিরুপ চক্রবর্তী ( সোনাই)। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় অ‍্যালকালি কোয়ার্টার এলাকার স্থানীয় ছেলেরা পুকুরে নেমে অনিকেতকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে। খবর পেয়ে কোন্নগর টাউন আউট পোষ্টের পুলিশ ...

শুনশান প্রেমের পীঠস্থান, লকডাউনে কেমন আছে চন্দননগর স্ট্র্যান্ড !

জনবার্তা প্রতিবেদন:  চন্দননগরের প্রাণকেন্দ্র গঙ্গার  ধার , একাধিক অফিস থাকার ফলে সবসময় কর্মচঞ্চল থাকে এই এলাকা। চায়ের দোকানের আড্ডা , পুলিশের গাড়ির সাইরেন , ফুচকার স্বাদ , মোমোর গন্ধ , চাউমিন, প্রেমিক প্রেমিকার হাত ধরে হাঁটাহাঁটি  সবসময় দেখতে অভস্ত চন্দননগর স্ট্র্যান্ড । কিন্তু লকডাউন তাল কেটে দিয়েছে । শহরবাসী এই স্ট্র্যান্ড দেখেনি কোনদিন।গুটি কয়েক লোক আর পুলিশের গাড়ি ছাড়া  স্ট্র্যান্ড  ফাঁকা । পৃথিবীর সুস্থতার লক্ষ্যে সবাই গৃহবন্দী ।একদিন প্রাণচাঞ্চল চন্দননগর স্ট্র্যান্ড আবার আগের অবস্থায় ফিরবে, আবার প্রেমিকের কাঁধে মাথা রেখে প্রেমিকা স্বপ্ন দেখবে  এই আশা নিয়েই আপাতত নিজেদের  চন্দননগর স্ট্র্যান্ড থেকে সরিয়ে রেখেছে শহরবাসী।