একনজরে হুগলী চুঁচুড়া প্রতিবেদন : আমাদের দেশ ভারতবর্ষ, যে দেশের নামের সাথেই " মা "- জগতের পবিত্রতম এই শব্দটি যুক্ত, বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে তার মর্যদা ভূলুণ্ঠিত | যে মহীয়সী নারীদের নাম নিয়ে আমাদের গর্বের, অহংকারের সীমা নেই সেই গার্গি, লোপামুদ্রা, খনা, মা সারদা, রানী লক্ষ্মী বাই, প্রীতিলতা ওয়াদদেদার, লক্ষ্মী সায়গল - দের সন্মানটুকুনি আমরা শুধু ইতিহাসের পাতাতেই সাজিয়ে রেখেছি, বাস্তব প্রেক্ষাপটে নারী আমাদের কাছে ভোগ্যপণ্যের চেয়ে বেশী কিছু না | মানুষের চামড়ার আড়ালে লুকিয়ে থাকা সেই হিংস্র পাশবিকতার শিকার তাই নির্ভয়া- রা, খবরের কাগজের প্রথম পাতায় তাই ধর্ষণ আজ Daily routine, আজও তাই রাত দশটার পর বাবা মায়ের কড়া নিষেধ - মেয়ের একা বেরোনো যাবে না | কারন রাতের অন্ধকারে বহু কুকুর ঘোরে যাদের অবিকল মানুষের মতো দেখতে আর তাদের বিষাক্ত কামড়ের প্রতিষেধক আমাদের সমাজে পাওয়া যায় না এখনো, স্বধীনতার প্রায় সাত দশক পরেও, সেই জন্যই একজন মহিলা I P S Officer এর কাছে এ দেশে মহিলা হয়ে জন্মানো পাপ, সেই জন্যই কন্যা ভ্রূণ হত্যা আজও পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্রের বুকে দগদগে ক্ষত |
কিন্তু সেই আমরাই গর্বে উন্মত্ত হয়ে পড়ি যখন বিশ্বের দরবারে সানিয়া মির্জা, ঝুলন গোস্বামী, মিথালি রাজ, সাইনা নেহয়াল, মেরী কম, সুস্মিতা সেন, দোলন রায়, ছন্দা গায়েন রা তেরঙ্গার উচ্চতা কে আরো উঁচুতে তুলে ধরেন বা যখন বিশ্বের সবচেয়ে মিষ্টি কণ্ঠের শিরোপাটা লতা মঙ্গেসকরের নামের আগে যুক্ত হয় | কিন্তু আমাদের পৈশাচিক প্রবৃত্তি এতটাই তীব্র যে এ সকল কেবলই আবেগ আর নারী - যিনি আমাদের জীবনদাত্রী তাঁর জীবনই আজ অন্ধকার গলিতে দম আটকায় দিনের পর দিন |
আমাদের সত্বাকেই আমরা অবহেলা করে চলেছি অনবরত | তাই ভারতাত্মা স্বামী বিবেকানন্দের কথায়, যতদিন ভারতবর্ষের নারীদের জাগরণ হবে না, ভারতবর্ষেরও পুনঃজাগরণ সম্ভব নয় | যে দেশকে ভালোবেসে, যে দেশের মানুষকে ভালোবেসে একসময় সিস্টার নিবেদিতা বা মাদার টেরেজার মতো দেবীরা নিজেদের জীবন উত্সর্গ করেছিলেন, সেই দেশে নারীদের সন্মানটুকু কোন তলানিতে এসে থেকেছে, তার নজির আজ ছোট - বড় কারো কাছে অজানা নয় |
বর্তমানে অবশ্যই দশভুজা হয়ে উঠছে নারী, তার যোগ্যতা, ক্ষমতা, উদ্যমের নিদর্শন আজ সর্বত্র কিন্তু অসুররা আজও আছে বরং তারা আরও হিংস্র ও আরও পৈশাচিক | কিন্তু একটি গাছের শিকড় ছাড়া যেমন গাছটি বাঁচতে পারেনা তেমনি নিজের সত্বাকে অবহেলা করেও একটি সমাজ, সভ্যতা বা একটি দেশ এগিয়ে যেতে পারে না | তাই যতদিন আমাদের ভেতরের এই পাশবিক আসুরিক প্রবৃত্তি বর্তমান থাকবে, যতদিন আমরা " মা "- এই শব্দটার মর্যদা দিতে পারব না ততদিন আমরা সমাজরুপী গাছের ডাল - যে ডালটায় আমরা সবাই বসে আছি - তাতে কোপ মারতেই থাকব নোংরা লোভ আর স্বার্থপরতার, আর খুব শীগ্রই যদি আমরা চোখ থেকে দানবীয় ভোগবাদের বন্ধন না খুলি তাহলে সর্বনাশের অকূল গহ্বরে খুব শীঘ্রই আমরা পতিত হব - তাতে কোনো সন্দেহ নেই ।।
আসছে "একনজরে জনমত পঞ্চায়েত"....
চোখ রাখুন একনজরে হুগলী চুঁচুড়া'য়.....
ADVERTISEMENT
পশ্চিমবঙ্গ সরকার কতৃক জনস্বার্থে প্রচারিত...
একনজরে হুগলী চুঁচুড়া নিবেদন করছে...
ও
সাহিত্যপত্র...
◆
Official Blogpost of Eknojore Hooghly Chuchura
Comments
Post a Comment